দেশের কোনো শিশু যেন টাইফয়েডের টিকাদান কর্মসূচি থেকে বাদ না পড়ে, সে বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। তিনি বলেছেন, জন্মসনদ থাকুক বা না থাকুক, প্রতিটি শিশুকে টাইফয়েডের টিকা দেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। টাইফয়েড টিকাদান নিয়ে প্রচারণার ঘাটতি এবং সামাজিক উদাসীনতা দূর করার ওপর তিনি জোর দিয়েছেন।
নূরজাহান বেগম উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “আমার ঘরে নাতি-নাতনি আছে, কাজের লোকেরও বাচ্চা আছে— কেউ বলেনি যে টাইফয়েডের টিকা নিচ্ছে। মানে আমরা সব ঘরে পৌঁছাতে পারিনি।” তিনি স্মরণ করিয়ে দেন যে, ডায়রিয়া, রাতকানা রোগসহ অনেক প্রতিরোধযোগ্য রোগ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হলেও টাইফয়েডে এখনো শিশুরা মারা যাচ্ছে বা স্থায়ী অঙ্গহানির শিকার হচ্ছে। এটাকে তিনি “লজ্জার” বিষয় হিসেবে অভিহিত করেন, কারণ টাইফয়েড একটি সম্পূর্ণ প্রতিরোধযোগ্য রোগ। দেরিতে হলেও টাইফয়েডের টিকাদান কর্মসূচি শুরু হওয়ায় তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা যোগাযোগের ঘাটতির কথা উল্লেখ করে বলেন, “টাইফয়েড এমন একটি রোগ, যা অল্প বয়সী শিশুদের জীবন বিপন্ন করে। অথচ পরিবারগুলো এর গুরুত্ব বোঝে না, এমনকি অনেকেই জানে না যে টাইফয়েডের টিকা এখন দেশে পাওয়া যাচ্ছে। এটা আমাদের যোগাযোগের ঘাটতি।” তিনি টিকা নিয়ে মানুষের ভয় বা বিভ্রান্তি দূর করতে স্কুল, মসজিদ, কমিউনিটি সেন্টার সহ সব স্তরে প্রচারণা বাড়ানোর আহ্বান জানান।
তিনি শতভাগ শিশুর টিকাদান নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হবে শতভাগ শিশুর টিকাদান নিশ্চিত করা। কেউ যেন বাদ না যায়। কারণ, একটি শিশু বাদ পড়া মানে একটি পরিবার ঝুঁকিতে থাকা। জন্মসনদ থাকুক বা না থাকুক, কোনো অজুহাতে শিশুকে বাদ দেওয়া যাবে না। প্রত্যেক ঘরের কাজের মানুষ, বস্তির শিশুরাও এই টিকার আওতায় আসতে হবে।” তিনি টিকাদান কার্যক্রমে প্রশাসনিক জটিলতা না বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সহজ ও বিনামূল্যে করার কথা বলেন।
স্বাস্থ্যের বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, স্বাস্থ্য খাতে জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি সবচেয়ে সফল এবং টাইফয়েডও দ্রুত নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আসবে। এজন্য সক্ষম জনবল তৈরি এবং মেডিকেল কলেজ, নার্সিং কলেজ ও ইন্টার্ন ডাক্তারদের এই কার্যক্রমে যুক্ত করার পরামর্শ দেন তিনি।